ইবাদতের অর্থ ও তাৎপর্য।

লোক দেখানো ইবাদতের শাস্তি। , যৌবনকালের ইবাদতের ফজিলত , ইবাদতের ধারণা ও প্রকারভেদ , কোন ইবাদতের প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন।


    ইবাদতের তাৎপর্য বর্ণনা করা হলো।






    কোন ইবাদতের প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দিবেন।


    আল্লাহ চান মানুষ এই দুনিয়ায় তার দাসত্ব এবং আনুগত্য করুক। আল্লাহকে প্রভু হিসাবে মেনে নিয়ে তাঁর হুকুমমতো জীবন পরিচালনা করুক। জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহর নির্দেশমতো করুক। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ মানুষকে এজন্যই সৃষ্টি করেছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন


    وما خلقت الجن والإنس إلا ليعبدون


    ‘জিন ও মানুষকে আমি শুধু এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদাত করবে।' সূরা আজ জারিয়াত : ৫৬


    ‘ইবাদত' শব্দের অর্থ বন্দেগি বা দাসত্ব। মানুষ আল্লাহর দাস বা গোলাম (আরবিতে আবদ)। আল্লাহ মানুষের মাবুদ। কোনো গোলাম বা চাকর যদি সত্যিকারভাবে তার মনিবের দাসত্ব স্বীকার করে নেয়, তার মনিবের একান্ত অনুগত হয় এবং গোলামের মতো আচরণ, তাকে সম্মান এবং তার দানের শোকর করে, তবে তার এই গোলামিকে বলে ইবাদত।


    আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যই হওয়া উচিত একমাত্র আল্লাহর গোলামি করা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষকে অনেক কাজ করতে হয়। এসব কাজ খোদার আইন অনুযায়ী করার নামই ইবাদত। প্রতিটি কাজ, প্রতিটি গতিবিধি খোদার নির্ধারিত সীমার মধ্যে হতে হবে। এই হিসেব অনুযায়ী সে যে কাজই করে তাই ইবাদত। এই সীমার মধ্যে তার ঘুম, জেগে থাকা, খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা, কথা বলা ও লেনদেন সবই ‘ইবাদত'।


    জীবনের কোনো এক বিশেষ মুহূর্তের জন্য আল্লাহর এই দাসত্ব মেনে নেওয়া নয়। দিন-রাত্রির কোনো বিশেষ সময়ের জন্য নয়। দিনের চব্বিশটি ঘণ্টা, বছরের প্রতিটি দিন- মোটকথা মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহর গোলাম হয়ে তাঁর হুকুম অনুযায়ী ।



    প্রতিটি কাজ করতে হবে। তাই আল্লাহর প্রকৃত দাস হিসেবে জীবন পরিচালনা করা কোনো সহজ বিষয় নয়। এজন্য চাই- দৃঢ় ঈমান, সাধনা ও অনুশীলন। আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন পরিচালনার পথে প্রথম বাধা আসে নিজের


    ভেতর থেকে। মানুষের নিজের ভেতরে আছে আরামপ্রিয়তা, লোভ-লাगा, ক্ষুধা-তৃষ্ণা, কামনা-বাসনা, আবেগ-উচ্ছ্বাস। সব ধরনের জড়তা, দুর্বলতা, অলসতা কাটিয়ে আল্লাহর গোলাম হিসেবে নিজকে গড়ে তোলার জন্য আল্লাহ কতগুলো কাজ ফরজ করে দিয়েছেন। এগুলো হলো নামাজ, রোজা, হজ্জ ও জাকাত। এইসব ফরজ কাজ মানুষকে আল্লাহর গোলাম হওয়ার ট্রেনিং দেয়। যে যত ভালোভাবে এই ট্রেনিং নেবে সে তত ভালোভাবে সেই দায়িত্ব পালন করতে পারবে- যে কারণে আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন। এসব ইবাদত পালন করে মানুষের গোটা জীবন আল্লাহর ‘ইবাদতে' পরিণত করার উপযুক্ত হয়।


    দিনে পাঁচবার নামাজ স্মরণ করিয়ে দেয়- আমরা আল্লাহর দাস, একমাত্র তাঁরই দাসত্ব করা আমাদের কতব্য। একমাস পুরো রোজা পালনের মাধ্যমে মানুষ তার নিজের ভেতরের পশু প্রবৃত্তিকে শাসন করতে শিখে। জাকাত স্মরণ করিয়ে দেয় তুমি যে অর্থ উপার্জন করেছ তা আল্লাহর দান। নিজের খেয়াল-খুশিমতো তা খরচ করলে চলবে না । আল্লাহর হুকুম মতো তোমার অর্থ ব্যয় করতে হবে। হজ মানুষের মন ভরিয়ে দেয় আল্লাহর প্রেম ও ভালোবাসায়। আল্লাহ মহান ও শ্রেষ্ঠ


    এই অনুভূতি তার হৃদয়ে এমন দাগ কাটে যা কোনো দিন ভুলে যাওয়ার নয়। তাই আল্লাহর গোলাম হওয়ার জন্য আমাদের সঠিকভাবে নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত আদায় করতে হবে।


    পাঁচটি আবশ্যকরণীয় ইবাদত


    কালেমা শাহাদাতের ঘোষণা, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত- এই পাঁচটি ইবাদতকে আল্লাহ আমাদের জন্য অবশ্যকরণীয় ইবাদত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এই পাঁচটি ইবাদতকে ইসলামের ভিত্তি (আরাকানে দ্বীন) বলা হয়। একটি ঘর যেমন খুটি বা ভিত্তির ওপর দাড়িয়ে থাকে, এগুলো ঠিক তেমনই। কালেমা শাহাদাতের ঘোষণা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর একত্ব ও হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাতের স্বীকৃতি। আল্লাহর আনুগত্য ও রাসূল (সা.) এর অনুসরণের মাধ্যমে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে । আর এ কাজে আমাদের সাহায্য করে অন্য চারটি আরকান- নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত।





                              নামাজ



    নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কুরআনের ভাষায় এর নাম 'সালাত'। নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি। যে ইবাদতটি করতে হয়- তা হলো নামাজ। নামাজ ফরজ হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন পাঁচবার অবশ্যই তা আদায় করতে হয়।


    নামাজ মানুষের স্বভাবধর্মের পরিচয়








    মানুষের স্বভাব হলো কোনো এক বিরাট শক্তির কাছে নিজকে পেশ করা ও শ্রদ্ধা জানানো। নদী যেমন আপনাআপনি বিশাল সমুদ্রের দিকে ছুটে চলে, তেমনি মানুষ এক মহৎ লক্ষ্যে নিজেকে নিবেদন করতে চায়। তাই যুগে যুগে মানুষ কোনো না কোনো কিছুকে বিরাট শক্তিময় মনে করে তার পূজা করেছে।


    বিশ্বজাহানের সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা। আর তাঁকে পাওয়াই মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড়ো স্বার্থকতা। তাই আল্লাহর সামনে নিজকে পেশ করে, মনে-প্রাণে এবং উচ্চারণে তাঁর প্রশংসা, তাঁর কাছে নিজকে নিবেদনের ওয়াদা করে, বুকে হাত বেঁধে দৃষ্টি অবনমিত রেখে, কোমর অবনত করে, মাটিতে মাথা রেখে যে ইবাদতটিকে আমরা নামাজ বলি তা মানুষের স্বভাবধর্মেরই পরিচয়।


    নামাজ মানুষের দেহ ও মনের এক স্বাভাবিক দাবি। তাই প্রত্যেক নবি রাসূল তাঁর অনুসারীদের আল্লাহর সামনে নিজকে পেশ, আল্লাহকে স্মরণ এবং আল্লাহর প্রশংসা করার জন্য নামাজের মতো কোনো না কোনো ইবাদতকে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রিয় নবি আমাদের দিয়েছেন দিনে পাঁচবার নামাজ আদায়ের শিক্ষা ।


    নামাজ আল্লাহর জিকির


    আমরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করি। নামাজ আমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দেয়।


    وأقم الصلوة لذكرى


    'আমাকে স্মরণ করার জন্য নামাজ কায়েম করো।' সূরা ত্বহা : ১৪


    ইসলামের সবচেয়ে বড়ো কথা হলো- আল্লাহর স্মরণ এবং তাঁর আনুগত্য। মুসলমান হিসেবে দুনিয়ার প্রতিটি কাজে সব সময় স্মরণ রাখতে হবে আল্লাহ আছেন, তিনি আমাকে দেখছেন এবং আমার অন্তরের সব কিছু তাঁর জানা । শয়তান আমাদের তার দাস বানাতে চায়। সব সময় আমাদের ভুলিয়ে রাখতে চায়। তাই ‘আল্লাহর স্মরণ' সব সময় জাগরুক রাখার জন্যেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। ঘুম থেকে উঠে দিনের শুরুতে একবার, দিনের নানান কাজের ফাঁকে আরও তিনবার এবং রাতে ঘুমের সময় আর একবার আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়- আমরা আল্লাহর গোলাম।


    তাই নবিজির শেখানো নিয়ম অনুযায়ী আমরা নামাজ আদায় করছি। একজন মুসলমানের নামাজের দিকে ভালোভাবে লক্ষ করো। কী সুন্দর এক ব্যবস্থা! আল্লাহকে স্মরণ ও দাসত্ব ঘোষণা করা, তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া ও তাঁর কিতাবের শিক্ষাকে বারবার উচ্চারণ, রাসূলের সত্যতা স্বীকার ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহির কথা স্মরণ করার জন্য এর চেয়ে চমৎকার ব্যবস্থা আর কি আছে? চিন্তা করো, নামাজের জন্য পাঁচবার অজু, নামাজে দাড়ানোর আদব, রুকু সেজদার মাধ্যমে ফুটে উঠা বিনয়ীভাব- সবকিছু মিলিয়ে নবিজির শেখানো নামাজ মানুষকে কত পবিত্র করে। কত মহান করে তোলে মাটির মানুষকে।


    একজন মুসলিম পাখিডাকা ভোরে নামাজের মতো এক সুন্দর ব্যবস্থার মাধ্যমে সতেজ অনুভূতি নিয়ে তার দিন শুরু করে। এরপর কাজের ফাঁকে সময় গড়িয়ে যায়। ভরদুপুরে মুয়াজ্জিনের ডাকে জোহরের সময় আবার সে সজাগ হয়। ঈমানকে ভাজা করে নিয়ে সে আবার দুনিয়ার কাজ-কর্মে ফিরে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর পড়ন্ত বেলায় শুরু হয় আসরের নামাজ। সে আবারও তার ঈমানকে ভাজা করে নেয়। এরপর মাগরিবের সময় দিন শেষ হয়। সে ভোর বেলায় যে ইবাদতের মধ্য দিয়ে দিন শুরু করেছিল, রাতটাও সেই ইবাদতের মধ্য দিয়ে শুরু করে। কারণ, সেই নামাজের মাধ্যমে পাওয়া শিক্ষা যেন তার চেতনায় রাতভর সতেজ থাকে। ঘনিয়ে আসে এশার সময়। সে দিনের কোলাহলে যে সুযোগ পায়নি রাত্রির প্রশান্তিতে নিশ্চিত মনে সেই ইবাদতে মশগুল হয় তার দেহ-মন।


    এই হলো সেই নামাজ- নবির শেখানো নামাজ, যা ইসলামের ভিত্তিকে মজবুত, করে। যে বড়ো 'ইবাদতের' জন্য আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন- মানুষকে সেই ‘ইবাদতের' জন্য তৈরি করার ‘ইবাদত' হচ্ছে নামাজ।


    নামাজ প্রকৃত বান্দা তৈরি করে


    মুসলমান হিসেবে প্রতি পদে পদে আল্লাহর হুকুম মেনে চলা আমাদের কর্তব্য । তাই মনের মধ্যে সব সময় এই কর্তব্যবোধ থাকতে হবে। মন থাকবে আল্লাহর হুকুম পালনে সদা প্রস্তুত। আল্লাহর হুকুম মানাকে জীবনের এক স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। এজন্য সৈনিকের মত সঠিক ট্রেনিং এর প্রয়োজন। একজন সৈনিককে যেমন প্রতিদিন যুদ্ধে না গেলেও যুদ্ধের প্রস্তুতিস্বরূপ প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করতে হয় তেমনি একজন মুসলমানকেও সকল অবস্থায় আল্লাহর আইন পালনে প্রস্তুত থাকার উদ্দেশ্যে নামাজের মাধ্যমে ট্রেনিং নিতে হয়। সে নামাজের মাধ্যমে সৈনিকের মতো নিয়ম-শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, ধৈর্য, সাহস-শৃঙ্খলার ট্রেনিং পায় ।


    সেই মুসলিম- যে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে ইসলাম অনুযায়ী কাজ করে, কুফরি ও ফাসেকির বিরুদ্ধে লড়াই করে। আর এভাবে মনে-প্রাণে প্রস্তুত হওয়ার 'ট্রেনিং' এর জন্য দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহকে খুশি করার জন্য জিহাদে প্রস্তুত সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠার এক বাস্তব কর্মসূচির নাম নামাজ। বাস্তব জীবনে আমরা আল্লাহর আইন মানতে প্রস্তুত কিনা তার পরীক্ষা ও প্রমাণ নেওয়ার জন্যই এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ । এজন্যই নামাজ পড়াকেই নবিজি কুফর ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্যের প্রধান চিহ্ন বলে উল্লেখ করেছেন।


    নামাজের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় খোদাভীতি


    আল্লাহ আমাদের সব সময় দেখছেন। তিনি আমাদের সবকিছু জানেন ও শোনেন। আল্লাহর দৃষ্টি থেকে লুকিয়ে থাকা কোনোভাবে সম্ভব না- মনের মধ্যে এই বিশ্বাস যত দৃঢ় হবে, আল্লাহর দেওয়া বিধিবিধান মেনে চলা ত সহজ হবে। আর এই বিশ্বাস দুর্বল হলে মুসলিম হিসেবে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কঠিন। পাচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে মনের মধ্যে এই বিশ্বাস দৃঢ় হয়। তাই নামাজ মুসলমান হিসেবে জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় এক ইবাদত।


    প্রত্যেক দিন পাঁচবার নামাজ আদায় করা খুব কঠিন কাজ বলে মনে হয়। কিন্তু যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং বিশ্বাস করে মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে- তাদের জন্য এ কাজ অত্যন্ত সহজ। আল্লাহ সুন্দরভাবে এ কথা কুরআনে বলে দিয়েছেন


    واستعينوا بالصبر والصلوة والهالكبيرة إلا على الخشعين الذين يظنون واتهم اليه راجعون أنهم ملقواربهم وا


    ‘তোমরা ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থণা করো। এটি সত্যি একটি কঠিন কাজ, কিন্তু তাদের জন্য কঠিন নয় যারা ভয় করে একদিন আল্লাহর সাথে দেখা হবে এবং তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে।' সূরা আল বাকারা : ৪৫-৪৬


    জামায়াতে নামাজ


    নামাজে আমরা কুরআন থেকে কিছু অংশ পাঠ করি । কুরআন আল্লাহর বিধান। কুরআনের এসব আয়াত বুঝে-শুনে পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর বিধানকে জানার সুযোগ পাই। এ ছাড়া নামাজের জামায়াতে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী দরিদ্র সব ধরনের মুসলমানই একত্রিত হয়। তখন মনের ভাবের আদান প্রদানের এক চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে আল্লাহর আইন, বিধিবিধান জেনে নেওয়ারও এক চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়। জামায়াতে নামাজের মাধ্যমে তৈরি হয় ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা।


    আল্লাহর দুশমনদের নির্মূল এবং দুনিয়ায় আল্লাহর বিধিবিধান জারির জন্য মুসলিমদের যে মিলিত শক্তি ও ঐক্য প্রয়োজন- দিনরাত পাঁচবার জামায়াতে নামাজ, জুমআর দিনে বড়ো জামায়াত, বছরের দুই ঈদের জামায়াতের মধ্যে সেই ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য সৃষ্টি করে। জন্ম দেয়, সেই ঐক্য ও চেতনার। আর বিশ্বের মুসলিমরা একই ভাষায় একই পদ্ধতিতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সেই চেতনার সাক্ষ্য দেয় যে- মুসলমানরা এক জাতি।




    নামাজ কীভাবে উপকারে আসে


    নামাজ আমাদের মধ্যে যেসব ভালো গুণ ও অভ্যাস সৃষ্টি করে তা আলোচনা করা হলো । কিন্তু এখানে একটি কথা ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। তা হলো নামাজ থেকে আমরা এতসব উপকার তখনই পাব যখন জেনে-বুঝে নামাজ আদায় করব। নামাজের মধ্যে নিজেদের আল্লাহর দাস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাঁর সামনে বিনয়ের সাথে যেভাবে রুকু, সিজদা করছি, তেমনি নামাজের বাইরে অন্যান্য কাজও আল্লাহর গোলামের মতোই করতে হবে। আল্লাহ যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন, নামাজ আদায়ের পর সেগুলো থেকে কি আমরা বিরত থাকতে পারি?


    নামাজের মধ্যে আমরা যেখানে বলছি- হে প্রভু! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমারই কাছে সবকিছু চাই (সূরা ফাতিহা) সেখানে নামাজের বাইরে কি আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোনো কাজ করতে পারি?


    তাই নামাজ থেকে ফায়দা পাওয়ার উপায় হলো




    ১. নামাজে আমরা যা যা বলছি সেগুলোর অর্থ ভালোভাবে বুঝতে হবে।




    ২. আল্লাহর সামনে নামাজ আদায় করছি- এই অনুভূতি নিয়ে নামাজ আদায় করতে হবে।




    ৩. নামাজের মাধ্যমে আমরা যেসব শপথ নিচ্ছি, নামাজের বাইরে সব কাজে তার ছাপ থাকতে হবে।


    শেয়ার করুন সবার জানার ও আমল করার তৌফিক দান করুন আমীন।


    LikeYourComment